পারিবারিক দারিদ্রতার কারণে ঢাকার আরগারগাঁও এলাকায় রিকশা চলাতেন মেছের আলী (৫০)। ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। এ সময় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটের আঘাত লাগে তাঁর চোখে ও কপালে। প্রথমে তাকে জাতীয় চক্ষু ইন্সটিটিউটে ভর্তি করান সঙ্গীরা। পরে ইসলামী চক্ষু হাসপাতালে অপারেশন করানো হয়। কিন্তু তারপরও রক্ষা করা যায়নি ডান চোখটি। এ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
মেছের আলীর বাড়ি রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী ইউনিয়নের সুখেরবাতি গ্রামে। পেশায় তিনি একজন রিকশা চালক।
তিনি বলেন, তাঁকে চিকিৎসকরা বলেছেন, ওই চোখে তিনি আর কখনও দেখতে পাবেন না। সেই থেকে বাড়িতে শুয়ে বসেই দিন কাটছে তাঁর। ঘরে এখন আর চুলা জ্বলে না।
মেছের আলীর স্ত্রী বাচান বেওয়া বলেন, তিনি ছাড়া আমাদের পরিবারে আর কোনো কর্মক্ষম মানুষ নেই। তাঁর আয়ে চলতো আমাদের পরিবার। চোখ হারিয়ে বাড়িতে বসে আছেন তিনি। আমাদের সংসার আর চলছে না। তাদের একটি মেয়ে ছিল, বিয়ে হয়ে গেছে। নেই কোনো ছেলে সন্তান। এমতাবস্থায় কারও কোনো সাহায্য-সহযোগিতা না পেলে, না খেয়েই মারা যাবেন বলে দাবি তাঁর।
চর শৌলমারী ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মো. তুহিন বলেন, ঢাকায় রিকশা চালাতো মেহের আলী। আগষ্ট মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাঁর এক চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেছে। এরপর থেকে তাঁর পরিবারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। নেই তাঁর জায়গা-জমি। অন্যের ভিটায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন মেছের। তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য একমাস আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। একটি আবেদন দিতেও বলছিলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আনিসুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। তাঁর লেখা একটি আবেদন পেয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব সাহায্যের ব্যবস্থা করা হবে।