নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ডেটা সেন্টারের সাবেক পরিচালক তারেক বরকতউল্লাহকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ডেটা সেন্টারে সংরক্ষিত ১১ কোটির বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য দেশি-বিদেশি ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির অভিযোগে করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার সকালে রাজধানীর কাফরুলের উত্তর কাজীপাড়া থেকে বরকতউল্লাহকে গ্রেফতার করা হয় বলে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়েছে।
১১ কোটির বেশি নাগরিকের ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্যের অনুলিপি বিক্রির ঘটনায় মঙ্গলবার রাজধানীর কাফরুল থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, তারেক বরকতউল্লাহসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসার অনুমতি দেন আসামিরা। জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে এনআইডির তথ্য দেশ-বিদেশের প্রায় ১৮২টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে ডিজিকন। এতে জনগণের নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। তথ্য বিক্রি করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
ডিএমপির গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) যাচাইসেবা গ্রহণ বিষয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ঐ চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ অনুসারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নির্বাচন কমিশনের তথ্য–উপাত্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিনিময় বা বিক্রি করতে পারবে না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, চুক্তি অনুসারে ১১ কোটির বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের অনুলিপি তৈরি করে ২০১৯ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে প্রদান করা হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এসব তথ্য ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রদান করে। ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি নাগরিকদের ব্যক্তিগত এই তথ্যগুলো porichoy.gov.bd নামক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১৮০টির বেশি দেশি-বিদেশি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থের বিনিময়ে ৫ বছর ধরে বিক্রি করছে।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, চুক্তির আগেই নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে কীভাবে দেওয়া হয়েছিল, সেটা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।