বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে মানুষের উদাসীনতা নতুন নয়। এমনকি মানসিক রোগ নিয়ে রয়েছে নানা অসচেতনতা, ভ্রান্ত ধারণা এবং ভুল বিশ্বাস। মানসিক সমস্যাকে কেউবা আবার পাগল, উদ্ভট বা বিকৃত মানসিকতার সাথেও তুলনা করেন।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সস্টিটিউটের ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে ১৮ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত।
এর মধ্যে শুধু এক শতাংশ মানুষ জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত বলে বলছেন চিকিৎসক এবং মনোবিদেরা।
চিকিৎসক এবং মনোবিদেরা বলছেন, ক্রমে বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একটু একটু করে সচেতনতা বাড়ছে, এবং আগের তুলনায় বেশি মানুষ সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হচ্ছেন।
যদিও মানসিক সমস্যা এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকে মনোচিকিৎসকের কাছে যায় না বেশিরভাগ মানুষ।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো না কোনো শারীরিক উপসর্গ নিয়ে রোগীরা আসেন চিকিৎসকের কাছে । বিষণ্ণতা বা উদ্বেগ যে কোনো মানসিক সমস্যা বা তা নিয়ে সচেতনতা নেই বেশিরভাগের।
বিষণ্ণতাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফলে শুরুতেই এর প্রতি যথাযথ দৃষ্টি না দিলে এ থেকে গুরুতর সমস্যা তৈরি হতে পারে।
এ বিষয়ে মনোবিদ ডা: মেখলা সরকার বলেছেন, ‘বিষণ্ণতা মানুষের মনের একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। একজন মানুষের কোনো বিষয়ে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়া বা এ ধরণের নানা কারণে মন বিষণ্ণ হতেই পারে।’
উদ্বেগ-জনিত রোগ আরেকটি মানসিক সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ রোগে সবচেয়ে সাধারণ যে বিষয়টি রোগীর হয় তা হলো প্যানিক অ্যাটাক। মনোচিকিৎসকরা জানান, প্যানিক অ্যাটাক হলে হয়তোবা পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে উপসর্গ তীব্র হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়ার পর দেখা যায় রোগী শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ।
এদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, মানসিক সমস্যা দেখা দিলে সময় ক্ষেপণ না করে দ্রুত চিকিৎসকের সরানাপন্ন হলে এ রোগ থেকে সেরে উঠা সম্ভব।